ছোট স্ট্রোকও স্নায়ুকলা ও মস্তিষ্কের কাজের ক্ষতি করতে পারে
সানডিয়েগোর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, মস্তিষ্কের খুব ছোট কোন রক্তনালীর ব্লক স্নায়ুকলার ক্ষতির কারণ হতে পারে, এমনকি এর ফলে মানুষের স্বাভাবিক ব্যবহারেও অনাকাঙ্খিত পরিবর্তন আসতে পারে । তবে আনন্দের বিষয় হলো এর থেকে রক্ষা পাওয়ার ওষুধও আবিস্কার হয়ে গেছে এবং অনেকে ব্যবহারও করছে । গবেষক দল গত ১৬ই ডিসেম্বর তাদের স্নায়ুবিজ্ঞান বিষয়ক অনলাইন সাইটে তথ্যটি প্রকাশ করে । গবেষক এন্ডি বলেছেন, "মস্তষ্কের রক্ত চলাচলের নালীগুলো অবিশ্বাস্যভাবে ঘন এবং আশ্চার্যজনক হলেও সত্য যে, অতি ক্ষুদ্র রক্তনালীর প্রবাহ বন্ধ হওয়া ইঁদুরের ব্যবহারেও প্রভাব ফেলতে পারে ।"
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিহ এই কাজটি সম্পন্ন করেন, যিনি পদার্থবিদ্যায় পোস্টডক্টরাল ফেলো । শিহ এবং তার সহকর্মীরা ইঁদুরের ক্ষুদ্র রক্তনালীসমূহের মধ্যে সুনির্দিষ্ট বিন্দুতে রক্ত জমাট বাঁধাতে লেজার রশ্মি ব্যবহার করেন যে রশ্মি মস্তিষ্কের বাইরে থেকে স্নায়ুকলা ভেদ করে । এক সপ্তাহ পরে যখন তারা সেই মস্তিষ্ক পরীক্ষা করল তারা দেখল অতি ক্ষুদ্র ছিদ্র অনেক ক্ষতি করেছে এবং কিছু স্মৃতিভংশও হয়েছে । তারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তৃষ্ণার্ত ইঁদুরের এক প্লাটফর্ম থেকে অন্য একটি অন্ধকার প্লাটফর্মে জল খেতে যাওয়ার মাধ্যমে স্মৃতিভংশের বিষয়টি বের করে ।
মিলিমিটারের মতো ক্ষু্দ্র এই ক্ষত প্রচলিত এমআরআই এর মাধ্যমে স্ক্যান করে চিহ্নিত করা হয় । এক মিলিবর্গ মস্তিষ্কপৃষ্ঠ থেকে প্রায় দুই ডজনের মতো রক্তনালী মস্তিষ্কে প্রবেশ করে । লস এঞ্জেলেসের সিডার-সিনাই মেডিকেল সেন্টারের স্নায়ুবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান প্যাট্রিক ডি লিডেন বলেছেন "প্রথমবার এই তথ্য আমাদের দেখায়,, এমনকি একটি অতি ক্ষুদ্র স্ট্রোকেও অক্ষমতা হতে পারে ।"তিনি আরও বলেন, "আমি ভীত যে আমাদের রোগীদের মধ্যে ক্ষুদ্র স্ট্রোকও দীর্ঘ সময়ের মধ্যে যেমন উন্মত্ততা এবং আলজেইমারস রোগ হিসাবে প্রকাশ পেতে পারে ।" ডাক্তার শিহ বলেন, "এমআরআই স্ক্যানিং পদ্ধতি মানুষের স্মৃতিভংশের লক্ষণগুলো রোগের প্রাথমিক পর্যায়েই সণাক্ত করতে সক্ষম ।"
মানুষ ভ্রুন অবস্থায় মাতৃগর্ভেই হাই তোলে
ডারহাম এবং লেনসেস্টার ইউনিভার্সিটির গবেষক ১৫টি সুস্থ ভ্রুণের উপর গবেষনা করে দেখেছেন যে, হাই তোলা প্রক্রিয়াটি ভ্রুণের বেড়ে ওঠা প্রক্রিয়াগুলোর মধ্যে একটি এবং এই প্রক্রিয়া ভ্রুন মাতৃগর্ভে থাকাকালীন সময়েই শুরু হয় । এই প্রক্রিয়াটি ডাক্তারদের জন্য ভ্রুনের স্বাস্থ্য সম্পর্কে একটি সহায়ক হিসেবে কাজ করবে । গবেষণায় বলা হয়, ভ্রুণ মাতৃগর্ভে শুধু হেঁচকি দেয়না, সাথে সাথে ঢোক গেলে, আদমোড়া ভাঙ্গে, এমনকি হাইও তোলে থাকে । ২৪ থেকে ৩৬ সপ্তাহ বয়সের আটটি মেয়ে এবং সাতটি ছেলে ভ্রুণের উপর চতুর্মাত্রিক স্ক্যানার ব্যবহার করে এ গবেষণা করা হয় এবং ছেলে ও মেয়েদের হাই তোলার অনুপাতের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে ।
যদিও হাই তোলার ব্যপারটি কেন হয় তা এখনও স্পষ্ট নয়, তবে ধারণা করা হচ্ছে ভ্রুনের বেড়ে ওঠার সাথে এর সম্পর্ক আছে । ডারহাম ইউনিভার্সিটির সাইকোলোজি বিভাগের প্রধান গবেষক নাদজা রেইসল্যান্ড বলেছেন, "গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যায় হাই তোলা প্রক্রিয়াটি ভ্রুণের স্বাস্থের সাথে সম্পর্কিত এবং ভ্রুণের বয়স বাড়ার সাথে সাথে হাই তোলার পরিমাণ কমে যায় ।" তিনি আরও বলেছেন, "ভ্রুণ ধারাবাহিকভাবে হাই তোলে না, কারণ সে বেশিরভাগ সময়ই ঘুমিয়ে থাকে এবং এই হাই তোলার অনুপাত ভ্রুণের মস্তিষ্ক বেড়ে ওঠার সাথে জড়িত ।"
সাধারণ জ্বর
যখন
মুখের ভেতরের তাপমাত্রা
৩৮০ সেলসিয়াসের
বেশি হয় এবং
বগলের তাপমাত্রা ৩৭.৫০ সেলসিয়াসের বেশি
হয় তখন তাকে
জ্বর বলে । জ্বর
কোন রোগ নয়,
তবে এটি অন্য
যে কোন মারাত্নক
রোগের লক্ষণ ।
জ্বরের প্রকারভেদ:-
1.
বিরতিহীন জ্বর:-
যে জ্বর সাধারণত
সারাদিন থাকে, ১০
সেলসিয়াসের চেয়ে কমে
না,
কখনো শরীরের মূল
তাপমাত্রাকে স্পর্শ করে
না তাকে বিরতিহীন
জ্বর বলে । যেমন,
নিউমোনিয়া, টাউফয়েড জ্বর,
যক্ষার জ্বর ও
ইউটিআই তে ধারাবাহিক
জ্বর হয় ।
2. অন্তর্বর্তীকালীন জ্বর:-
যখন জ্বর দিনের
মধ্যে কয়েক ঘণ্টা
থাকে, তাকে অন্তর্বর্তীকালীন জ্বর বলে
।
যেমন, ম্যালেরিয়া ও
কালা-জ্বর ।
3. বিরতিদায়ক জ্বর:-
যে জ্বর সাধারণত
সারাদিন থাকে, ২০
সেলসিয়াসের চেয়ে যায়
এবং শরীরের মূল
তাপমাত্রাকে স্পর্শ করে
তাকে বিরতিদায়ক জ্বর
বলে । যেমন, ফুসফুসের
ফোড়ার জ্বর ।
লক্ষণ ও উপসর্গ:-
1.
গা ম্যাজ
ম্যাজ করা ।
2.
আলস্য ও
ঘুম ঘুম ভাব
।
3.
মাথা ভার
ভার লাগে ।
4.
মানসিক হতাশা
।
5.
ক্ষুধাহীনতা ।
6.
শরীর ব্যথা
।
7.
একাগ্রতার অভাব
।
ইতিহাস গ্রহণ:-
1.
কোন সংক্রামক রোগের লক্ষণ:-
গলা ব্যথা, নাক
দিয়ে পানি ঝরা,
হাঁচি এবং নাক
ও কপালের ব্যথা
ইত্যাদি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা
করতে হবে । (সর্দি
জ্বর)
2.
জনন ও
রেচনতন্ত্রের লক্ষণ:-
প্রস্রাবের চাপ কেমন
ও প্রস্রাবে ব্যথা
আছে কিনা জানতে
হবে । (ইউটিআই)
3.
পেটের লক্ষণ:-
ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা
ও ওজন কমছে
কিনা জানতে হবে
।
(আইবিডি)
4.
জোড়ার লক্ষণ:- শরীরের
জোড়ায় ব্যথা, কোন
জোড়া ফুলে গেছে
কিনা এবং কোন
জোড়া নাড়াতে সমস্যা
হয় কিনা জানতে
হবে । (বাত)
5.
চুলকানি:- চুলকানি
আছে কিনা জিজ্ঞাসা
করতে হবে । (অ্যালার্জি)
6.
ভ্রমণ:- জ্বরের
আগে কোথাও বেড়াতে
গিয়েছিল কিনা । (ম্যালেরিয়া
ও কালা-জ্বর)
উপস্থাপন:-
1.
রাতে ঘেমে
যাওয়া → যক্ষার
সম্ভাবনা ।
2.
মানসিক দ্বিধা
→ সাদারণত বাচ্চদের
ক্ষেত্রে হয় ।
3.
শরীর ব্যথা
→ ভাইরাস দ্বারা
আক্রমণ ।
4.
নাক দিয়ে
পানি পড়া, মাথা
ব্যথা ও কপালে
ব্যথা → বেকটেরিয়া
দ্বারা আক্রমণ, সর্দি
জ্বর ।
ইতিহাস গ্রহণের সময় যা অবশ্যই জিজ্ঞাসা করতে হবে:-
1.
কত দিন
ধরে জ্বর?
2.
বেশি না
কম জ্বর?
3.
জ্বর কেমন,
সবসময় ছিল নাকি
মাঝে মাঝে ছিল?
4.
বমি হয়েছে
কিনা?
5.
জ্বর ছাড়ার
সময় শরীর ঘামতো
কিনা?
6.
খাবারে রুচি
আছে কিনা?
7.
ওজন কমেছে
কিনা?
8.
কোন ওষুধ
খেয়েছে কিনা?
চিকিৎসাগত পরীক্ষা:-
1.
তাপমাত্রা:- তাপমাত্রা
মাপতে হবে থার্মোমিটার
দিয়ে । মুখের ভেতর
রাখতে হবে ১
মিনিট তারপর তাপমাত্রা
দেখতে হবে । মুখের
তাপমাত্রা ১০০.৮০ ফারেনহাইটের বেশি
হলে জ্বর আছে
।
বগলে মাপলে ১
মিনিট রেখে দেখতে
হবে,
যদি ৯৮.৬০
ফারেনহাইটের বেশি হলে
বুঝবে জ্বর আছে
।
2.
নাড়ী স্পন্দন:-
স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি
থাকবে । স্বাভাবিক নাড়ীর
স্পন্দন প্রতি মিনিটে ৭২
থেকে ৯০ বার
।
3.
চুলকানি:- বসন্ত
রোগে সাধারণত পানিযুক্ত
ফুসকুরি থাকে ।
ব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসা:-
(ক)
উপদেশ:-
1. কিছুক্ষণ
পরপর ভেজা গামছা
বা তোয়ালে দিয়ে
শরীর মুছে দিতে
হবে ।
2. যদি
গলা ব্যথা ও
শরীরে ব্যথা থাকে
তাহলে এন্টিবায়োটিক খাওয়া
যাবে না ।
3. রোগীকে
বিশ্রাম নিতে হবে
।
4. প্রচুর
পরিমাণে শাক-সবজি
ও পরিস্কার পানি
খেতে হবে ।
5. ভিটামিন
সি যুক্ত খাবার
খেতে হবে, যেমন,
লেবু আনারস, পেয়ারা
ও আমলকি ।
(খ)
চিকিৎসা:-
প্রাপ্ত বয়স্ক:- রোগীর
বয়স ১৮ বছরের চেয়ে বেশি হলে প্যারাসিটামল+ক্যাফেইন ৫০০ মি.গ্রা. ট্যাবলেট
যেমন নাপা এক্সট্রা (Napa Extra), এইস প্লাস (Ace Plus) জাতীয় ওষুধ খাওয়ার
পর দিনে ৩ বার ৪ দিনের জন্য খেতে হবে । জ্বরের ওষুধের সাথে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ ওমেপ্রাজল ২০ মি.গ্রা. ক্যাপসুল দিনে দুই বার খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে খেতে হবে ।
শিশু: ১ বছরের চেয়ে কম বয়সের বাচ্চাদের ১২০ মি.গ্রা. সিরাপ বা সাসপেনশন অথবা ৬০ মি.গ্রা. সাপোজিটরি, ১ থেকে ৬ বছর বয়সের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ২৫০ মি.গ্রা. ট্যাবলেট অথবা ১২৫ মি.গ্রা. সাপোজিটরি এবং ৬ থেকে ১২ বছর বয়সের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ৫০০ মি.গ্রা. ট্যাবলেট খাওয়ার পর দিনে তিনবার ৪ দিনের জন্য খেতে হবে ।
সূত্রঃ ড্রাগ ডিরেকটরি, বাংলাদেশ ।